শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১০:৪১ অপরাহ্ন

News Headline :
রাজশাহী মহানগরীতে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডে আ’লীগের সাবেক সভাপতিসহ গ্রেফতার ৯ নওগাঁর ১নং ভাঁরশো ইউনিয়নে কৃষক দলের উদ্যোগে কৃষক সমাবেশ অনুষ্ঠিত কুষ্টিয়ায় র‌্যাবের অভিযানে ডাকাতি মামলার সাজাপ্রাপ্ত ১ আসামি গ্রেফতার রাজশাহীতে ফের বাস ও সিএনজি চালকের সংঘর্ষ আহত ২ রাজশাহীর পুঠিয়ায় ইটের মাপ কমিয়ে ক্রেতাদের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগ পাবনায় বালুবাহি ট্রলি চাঁপায় পুলিশ সদস্য নিহত ১জন আহত আটক ২জন বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড ঠিকাদার সমিতি’র নতুন কমিটি গঠন রাজশাহীতে ভরা মৌসুমে সারের তীব্র সংকট! আলু বীজ রোপণ করতে পারছেন না চাষিরা! দৈনিক আজকালের খবর পত্রিকা’র সাংবাদিক না ফেরার দেশে চলে গেলেন আন্তর্জাতিক অভিবাসী দিবস ও জাতীয় প্রবাসী দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা চেক বিতরণ ও সম্মাননা প্রদান অনুষ্ঠান

রাজশাহীর আমবাগানে ফোটেনি আশানুরূপ মুকুল!

Reading Time: 2 minutes

মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী:
ঋতুরাজ বসন্ত এসেছে ১৩ দিন হলো। ফাগুনের আগুনের এখনও দেখা মিলেনি প্রকৃতিতে। সবুজ আ¤্রকাননে ঝিলিক দিচ্ছে সোনালি মুকুল। এ সময়ে গাছে মুকুলে মুকুলে ভরে থাকার কথা থাকলেও অধিকাংশ গাছেই আসেনি মুকুল। জলবায়ু পরিবর্তন প্রভাব ও তীব্র শীতই এর অন্যতম কারণ হতে পারে বলে জানিয়েছেন কৃষিবিদরা।
বছর ঘুরে ঋতু বৈচিত্রে আমের শহর ও রাজধানীখ্যাত রাজশাহী ও চাঁপাইয়ে সবুজ প্রকৃতির আমেজ এখন অনেকটা এমনই আবেগের হয়ে উঠেছে। এরপরও বছরের নির্দিষ্ট এই সময়জুড়ে রাজশাহীর আমচাষি ও ব্যবসায়ীসহ কমবেশি সব শ্রেণির মানুষেরই নজর আম বাগানের দিকে। আমের সবুজ পাতা আর মুকুলে এখন দোল খাচ্ছে চাষিদের রঙিন স্বপ্নও। রাজশাহী জেলার প্রায় সব এলাকাতেই এখন প্রচুর আমবাগান রয়েছে। যতই দিন যাচ্ছে ততই নতুন নতুন জাত উদ্ভাবন হচ্ছে। সেসব জাতের আমের বাগানও তৈরি হচ্ছে। অল্প সময়ের মধ্যে মিলছে আমের ফলনও। কিন্তু এখনও অধিকাংশ গাছে মুকুল না আসায় দুশ্চিন্তায় ভোগাচ্ছে।
দেশের অর্থনীতিতে আম লাভজনক মৌসুমি ফল ব্যবসা। তাই প্রতি বছরই বাগানের সংখ্যা বাড়ছে। তবে গড়ে ওঠা নতুন আমবাগানগুলোর প্রায়ই বনেদি জাতের। বিশেষ করে নিয়মিত জাত ল্যাংড়া, গোপালভোগ, ক্ষিরসাপাত ও আশ্বিনা জাতের হাইব্রিড গাছই বেশি হচ্ছে।
সাধারণত মাঘের শেষেই আম গাছে মুকুল আসে। এবার তার ব্যতিক্রম লক্ষ্য করা গেছে। আগে রাজশাহীতে আমের মৌসুমে ‘অফ ইয়ার’ এবং ‘অন ইয়ার’ থাকতো। অফ ইয়ারে ফলন কম হতো আর অন ইয়ারে বেশি হত। কিন্তু প্রায় এক যুগের বেশি সময় থেকে রাজশাহীর গবেষক ও আম চাষিদের অক্লান্ত পরিশ্রমে এই রেওয়াজ ভেঙেছে। বছরজুড়ে চাষিদের নিয়মিত পরিচর্যার কারণে এখন রাজশাহীর সব বাগানেই প্রতিবছরই আমের আশানুরূপ ফলন হচ্ছে এবং বাড়ছেও।
এছাড়া এবার পৌষের শেষেও রাজশাহীর অনেক আমবাগানে আগাম মুকুল দেখা গেছে। সোনালি মুকুলে প্রতিবার ছেয়ে গেলেও এবার তা ব্যতিক্রম। গাছে আসছে অল্প সংখ্যক মুকুল। বিগত বছরগুলোতে গাছজুড়ে মুকুলের আধিপত্যে থাকলেও এবার বাগানগুলো দেখে তাই আমচাষিদের মনে আশার প্রদীপ জ্বলছে না। প্রতিদিনই চলছে পরিচর্যা। আমগাছের গোড়ায় মাটি দিয়ে উঁচু করে দেওয়া হচ্ছে সেচ।
বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তারা বলছে, পুরোপুরিভাবে শীত বিদায়ের আগেই আমের মুকুল আসা খুব একটা ভালো ব্যাপার নয়। মাঝে-মধ্যেই ঘন কুয়াশা থাকছে প্রকৃতিতে। আর এমন হঠাৎ-হঠাৎ ঘন কুয়াশা আমগাছের মুকুলের কাল। এতেই ক্ষতিগ্রস্ত হবে মুকুল। যা পরে ফলনেও প্রভাব ফেলবে। যদিও প্রাকৃতিক নিয়মে ফাগুন মাসে ঘন কুয়াশার আশঙ্কা খুবই কম। এর পরও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে প্রকৃতি বিরূপ আচরণ করলে আমের মুকুল ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা। মাঝে মধ্যে ঘনকুয়াশা পড়লেও মুকুলের ক্ষতি হবে। পাউডারি মিলডিউ রোগে আক্রান্ত হয়ে এসব মুকুলের অধিকাংশই ঝরে যায়। ফলে আক্রান্ত বাগান মালিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। রাজশাহীর পবার আম ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম বলেন, একবার ফলন হলেও তাই বছরের প্রায় পুরোটা সময়টা জুড়েই আমবাগানের পরিচর্যায় তাদের সময় চলে যায়। মাঘের শেষে ফেব্রæয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময়ে আমের মুকুল আসে। তবে এবার প্রায় আগেই আমের গাছে মুকুল এসেছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও পোকার আক্রমণ থেকে আমের মুকুলকে বাঁচাতে। আগাম কীটনাশক প্রয়োগসহ, গাছ পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন আমচাষি ও বাগান মালিকরা। মুকুল রক্ষা করতে গাছে গাছে ওষুধ স্প্রে করছেন অনেকে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এবার আমের ফলন বাম্পার প্রত্যাশা করছে বাগান মালিকরা।
কৃষি বিভাগের তথ্য বলছে, বিভাগের বিভিন্ন জেলার প্রায় ৩৫ শতাংশ গাছে আমের মুকুল এসেছে। এসব গাছে আমের মুকুল রক্ষা ও সঠিক পরিচর্যায় বেশি যতœবান হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছে।
রাজশাহী কৃষি স¤প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মোজদার হোসেন বলেন, এবার রাজশাহীতে ১৯ হাজার ৬০২ হেক্টর জমির আমবাগানে ২ লাখ ৬০ হাজার ১৬৪ মেট্রিকটন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, সকল প্রতিকূলতা পাশ কাটিয়ে এগুতে পারলে আম রফতানি বৃদ্ধি করতে পারবেন তারা।

Please Share This Post in Your Social Media

Design & Developed BY Hostitbd.Com